চ্যাট জিপিটি , আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রমাণ করছে কুরআন সত্য

আমাদের চারিদিকে চলছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) জয়জয়কার। মানুষ প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত নিতে চ্যাট জিপিটি বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মুখাপেক্ষী হচ্ছি।  AI স্বাস্থ্যসেবা, অর্থনীতি, স্বয়ংক্রিয় যানবাহন এবং ভার্চুয়াল সহকারীর মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে, যা দক্ষতা এবং নির্ভুলতা বাড়াতে সাহায্য করছে। চ্যাট জিপিটি বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিপুল পরিমান ড্যাটা বিশ্লেষণ করে তারপর সিদ্ধান্ত নেয় বলে খুব অল্প সময়ে প্রায় সঠিক তথ্য চ্যাট জিপিটি থেকে পাওয়া সম্ভব।

কিন্তু চ্যাট জিপিটি বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় কোন ধর্মটা সঠিক, তাহলে সে সাধারণত উত্তর দেয়- “ধর্ম এবং তার সঠিকতা নিয়ে আলোচনা ব্যক্তিগত, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল।ধর্মীয় বিশ্বাস একটি গভীরভাবে ব্যক্তিগত ও স্পর্শকাতর বিষয়, যা মানুষের অন্তর্নিহিত মূল্যবোধ ও জীবনের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভরশীল। সবারই নিজস্ব বিশ্বাস এবং মতামত সম্মান করা উচিত।”— ইত্যাদি, ইত্যাদি।

অর্থাৎ, চ্যাট জিপিটি , আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কখনই কোন নির্দিষ্ট ধর্মের পক্ষে কথা বলে না। কিন্তু আমরা যদি সুর্দিষ্টভাবে চ্যাট জিপিটির কাছে কুরআনের মিরাকলের সাথে সম্পর্কিত বিষয় জানতে চাই তাহলে দেখব সে কুরআন যে একটি মিরাকুলাস গ্রন্থ – এ তথ্যটি মেনে নিচ্ছে। নীচে বেশ কয়েকটি উদাহরণ দেয়া হল-

চ্যাট জিপিটিকে জিজ্ঞাসা করা হল কুরআনে- Day বা ‘দিন’ বা ‘দিবস’ শব্দটি কতবার আছে? সে উত্তর দিল ৩৬৫ বার আছে এবং সেই সাথে মেনে নিল যে কুরআনে ৩৬৫ বার ‘দিন’ শব্দটি থাকাটা কুরআনের ভাষাগত অলৌকিকতা এবং এই বিষয়টি কুরআনের জটিল গঠন ও গভীরতাকে প্রতিফলিত করে।

চ্যাট জিপিটিকে জিজ্ঞাসা করা হল কুরআনে- Days বা ‘দিনগুলি’ বা ‘দিবসগুলি’ শব্দটি কতবার আছে? সে উত্তর দিল ৩০ বার আছে এবং সেই সাথে তথ্য দিল যে কুরআনে ৩০ বার ‘দিবসগুলো’ শব্দ থাকাটা চন্দ্র মাসের হিসাবের সাথে সম্পর্কিত বিষয় এবং এটি কুরানের জটিল সংখ্যাগত প্যাটার্নকে তুলে ধরে অর্থাৎ চ্যাট জিপিটিকে আবারও কুরআনের অলৌকিকতা মেনে নিচ্ছে।

এভাবে চ্যাট জিপিটিকে জিজ্ঞাসা করা হল কুরআনে- Months বা ‘মাসগুলি’  শব্দটি কতবার আছে? সে উত্তর দিল ১২ বার আছে এবং সেই সাথে আবারও কুরআনের অলৌকিকতা মেনে নিল।

এভাবে আরও অসংখ্য প্রশ্নের মাধ্যমে কুরআনের মিরাকুলাস গঠন বার বার স্পস্ট হয়ে উঠতে থাকে।

চ্যাট জিপিটির দেয়া তথ্য থেকে দেখা যায় বেশ অনেক ক্ষেত্রেই বিস্ময়কর শাব্দিক ব্যালান্স আছে, যেমন কুরআনে পুরুষ শব্দটি আছে ২৪ বার এবং স্ত্রী শব্দটিও আছে ২৪ বার, অর্থাৎ ব্যালন্স মেইটেইন হয়েছে।

একইভাবে জান্নাত, জাহান্নাম শব্দ আছে সমান সমান ৭৭ বার করে।

একইভাবে শয়তান , ফেরেশতা শব্দ আছে সমান সমান ৬৮ বার করে।

একইভাবে জীবন , মৃত্যু শব্দ আছে সমান সমান ১৪৫ বার করে।

একইভাবে আদম (আঃ) , ঈসা (আঃ) শব্দ আছে সমান সমান ২৫ বার করে।

অর্থাৎ অসংখ্যবার বিপরীতার্থক শব্দের মধ্যে বিস্ময়কর ব্যালান্স মেইনটেইন হয়েছে। এই বিষয়টি হিমানয়েড নয়। কারণ এত বার বার নিতান্ত কাঁকতলিয় ভাবে এ ধরনের ব্যালান্স মেইনটেইন হতে পারে না। 

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে চ্যাট জিপিটিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কুরআনে ‘ভূমি’ এবং ‘সমুদ্র’ এই শব্দ দুটি কতবার আছে এবং তাদের মধ্যে অনুপাত কত, সে উত্তর দিল– কুরআনে ‘ ভূমি’ শব্দটি আছে ১৩ বার আর ‘সমুদ্র’ শব্দটি আছে ৩২ বার। আর ১৩ এবং ৩২ এই দুটি সংখ্যার অনুপাত ২৮.৮৯ এবং ৭১.১১, এবং পৃথিবীতে ভূমি এবং সমুদ্রের অনুপাত প্রায় ২৯ঃ৭১, অর্থাৎ কুরআনে ভূমি আর সমুদ্রের অনুপাত অনুযায়ীই এই দুটি শব্দ স্থাপিত হয়েছে, এই বিষয়টি কুরআনের সংখ্যাতাত্ত্বিক মিরাকল যা পৃথিবীর প্রকৃতির সাথে সম্পর্কিত।

লক্ষ্য করুণ চ্যাট জিপিটি স্পস্ট করেই বলছে কুরআন মিরাকুলাস বা ডিভাইন।উল্লেখ্য কুরআন নাযীল হয়েছে প্রায় ২৩ বছর ধরে, কিছু আয়াত মক্কায় আর কিছু আয়াত মদিনায় আর কুরআন সংকলিত হয়েছে, নবী মুহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর পরে। কেউ ক্যাল্কুলেটারের সাহায্য নিয়ে ২৩ বছর ধরে গুনে গুণে কুরানের বিভিন্ন আয়াতের মধ্যে শব্দের বিন্যাস ঘটাবে এমন সম্ভাবনা প্রায় শূণ্য। তাছাড়া সমুদ্র আর ভূমির অনুপাত যে  ২৯ঃ৭১ এই তথ্য আরবের মানুষের জানা থাকার কথা নয়।

কাজেই আমরা স্পস্ট দেখতে পাচ্ছি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত হচ্ছে কুরআন একটি ডিভাইন বা ঈশ্বর প্রদত্ত গ্রন্থ , কারণ এর মধ্যে অসংখ্য শাব্দিক বিন্যাস এবং সংখ্যাতাত্ত্বিক বিন্যাস আছে যা ১৪০০ বছর আগের কোন মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়।

আচ্ছা, চ্যাট জিপিটি তো বার বার মেনে নিচ্ছে কুরআন মিরাকুলাস বা ডিভাইন, এবার দেখা যাক সে বাইবেল এবং বেদ নিয়ে কি বলে?

চ্যাট জিপিটিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল বাইবেলে কতবার ‘দিন’ ‘মাস’ এবং ‘বছর’ শব্দগুলো আছে? দেখুন তার উত্তর- 

 

একই ভাবে চ্যাট জিপিটিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল হিন্দু ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ বেদে কতবার ‘দিন’ ‘মাস’ এবং ‘বছর’ শব্দগুলো আছে? দেখুন তার উত্তর- 

আমরা দেখতেই পাচ্ছি চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে কুরআনের ডিভিনিটি যত সহজে প্রমাণিত হয়, বাইবেল বা বেদের ক্ষেত্রে সেটি হয় না। কুরআনের সাথে অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ গুলোর স্পস্ট পার্থক্য বিদ্যমান।

এভাবে খুব সহজেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাহায্য নিয়ে আমরা প্রকৃত সত্যকে যাচাই করতে পারি। এবং প্রকৃত সত্যের সন্ধান পেতে পারি।

 

লিংক-

কুরআনে আধুনিক জ্ঞান

বিজ্ঞানময় কুরআন

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »