সুরা যারিয়াতের ৪৭ নাম্বার আয়াতে আকাশ বা মহাবিশ্বের কথা বলতে গিয়ে আল্লাহ নিজেকে মহাকাশের মহা সম্প্রসারণকারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এই আয়াতে বলা হয়েছে—
And the heaven We constructed with strength, and indeed, We are [its] expander. [51:47]
[Sahih International]
মূল আয়াতাংশ مُوسِعُونَ শব্দটির দুটি অর্থ হয়–
১। ক্ষমতা ও শক্তির অধিকারী
২। মহা সম্প্রসারণকারী
ইবন কাসীর মহা সম্প্রসারনকারী অর্থ গ্রহণ করেছেন। তিনি অর্থ করেছেন, “ আমি আকাশ নির্মাণ করেছি আমার ক্ষমতা বলে এবং আমি অবশ্যই মহা সম্প্রসারণকারী।”
ইবনে আব্বাস (রা), হযরত মুজাহিদ (রঃ), হযরত কাতাদা (রঃ), হযরত সওরী (রঃ) বলেন যে এই আয়াতের ভাবার্থ হচ্ছে –‘ আমি আকাশকে স্বীয় শক্তিবলে সৃষ্টি করেছি। আমি মহা সম্প্রসারণকারী। আমি আকাশের প্রান্তদেশের সম্প্রসারণ করেছি এবং একে বিনা স্তম্ভে দাঁড় করিয়ে রেখেছি এবং প্রতিষ্ঠিত করেছি। [ইবন কাসীর]
অত্যন্ত বিস্ময়কর হচ্ছে মহাবিশ্ব যে সম্প্রসারন করছে এই ধারনাটি খুবই আধুনিক। ১৯২৯ সালে জ্যোতির্বিদ এডউইন হাবল তার টেলিস্কোপের সাহায্যে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণ করেন যে গ্যালাক্সিসমূহ একে অন্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তিনি মাউন্ট উইলসন পর্যবেক্ষণকেন্দ্র থেকে দেখতে পেলেন, যে গ্যালাক্সিগুলো দূরে সরে আচ্ছে তাদেরকে লাল বর্ণের দেখায় আর যেসব গ্যালাক্সি একে অন্যের কাছাকাছি সরে আসছে তাদেরকে নীল বর্ণের দেখায়। অর্থাৎ মহাবিশ্বের সম্প্রসারন হচ্ছে ।
ছবিঃ সৃষ্টির পর হতে মহাকাশ প্রতিনিয়ত সম্প্রসারণ করে চলেছে।
মহাবিশ্ব কত গতিবেগে সম্প্রসারণ করছে সেটাও কিন্তু হিসাব করা হয়েছে। পূর্বে ধারণা করা হতো মহাবিশ্ব প্রতি ১ সেকেন্ড মেগাপারসেকে ৬৩-৬৭ কিলোমিটার সম্প্রসারিত হচ্ছে কিন্তু বর্তমান গবেষণা অনুসারে দেখা যাচ্ছে সেটা হলো ৭৩ কিলোমিটার ১ সেকেন্ড মেগাপার্সেক । ১ মেগাপারসেক হলো ৩ মিলিয়ন আলোকবর্ষ ।মহাবিশ্বের এই গতি আমাদের কল্পনাকেও হার মানায় । মহাবিশ্ব যে কত বড় আর আমরা যে কত ক্ষুদ্র তা বোধহয় আমাদের ধারণাতেও নেই ।
মোটকথা মহাবিশ্ব সম্প্রসারন করছে – এই তথ্য মানুষ জেনেছে ১৯২৯ সালের পরে। কিন্তু মহান আল্লাহ কোরআনে নিজেকে আকাশের সম্প্রসারনকারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন সেই ১৪০০ বছর আগেই!