কুরআনে চাঁদ ও সূর্যের কক্ষপথ !

যদি বলা হয় কুরআনে চাঁদ , সূর্যের বৃত্তাকার কক্ষপথের কথা বলা হয়েছে, তাহলে অনেকেই অবাক হবেন। কারণ কোরআন নাযীল হবার সময় চাঁদ অথবা সূর্যের কক্ষপথের আকৃতি নিয়ে মানুষের কোন ধারনা থাকার কথা নয়। কুরআনে চাঁদ ও সূর্যের কক্ষপথ !

কুরআনের দুটি আয়াতে ‘কক্ষপথ’ শব্দটি পাওয়া যায়। সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৩৩ (২১ঃ৩৩) এবং সূরা ইয়াসীন, আয়াত ৪০ (৩৬ঃ৪০)।

আরবিতে ‘কক্ষপথ’ হিসেবে ‘فَلَكٍ’ (ফালাকিন)  শব্দ ব্যবহার করা হয়।

এই ফালাকিন শব্দটির মূলত তিনটি অর্থ পাওয়া যায় ডিকশনারিতে — ১। কক্ষপথ (Orbit) ২। গোলাকার (Sphere) ৩। আবর্তন (Circuit)
অর্থাৎ ‘فَلَكٍ’ (ফালাকিন) শব্দের মাধ্যমে গোলাকার কক্ষপথের দিকে ইংগিত করা হয়েছে।

কুরআনে চাঁদ ও সূর্যের কক্ষপথ !

অর্থাৎ ‘فَلَكٍ’ (ফালাকিন) শব্দের মাধ্যমে গোলাকার কক্ষপথের দিকে ইংগিত করা হয়েছে।

তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে। [সুরা আম্বিয়া - ২১:৩৩]
তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে। [সুরা আম্বিয়া – ২১:৩৩]
সূর্য নাগাল পেতে পারে না চন্দ্রের এবং রাত্রি অগ্রে চলে না দিনের প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সন্তরণ করে। [সুরা ইয়া-সীন - ৩৬:৪০]
সূর্য নাগাল পেতে পারে না চন্দ্রের এবং রাত্রি অগ্রে চলে না দিনের প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সন্তরণ করে। [সুরা ইয়া-সীন – ৩৬:৪০]

দীর্ঘ সময় ধরে মানুষ বিশ্বাস করত যে সূর্য স্থির এবং গ্রহগুলো এর চারদিকে আবর্তিত হয়। একে সৌরকেন্দ্রিকতা (Heliocentrism) বলা হয়। ১৬শ শতকে, পোলিশ গণিতবিদ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিকোলাউস কোপের্নিকাস সৌরকেন্দ্রিক জগতের একটি মডেল উপস্থাপন করেন। কোপের্নিকাস বলেন, সূর্য প্রকৃতপক্ষে কেন্দ্রে স্থির রয়েছে এবং গ্রহগুলো এর চারপাশে আবর্তিত হচ্ছে। পরে, এই মডেলটি আরও উন্নত করেন জার্মান জ্যোতির্বিদ ইয়োহানেস কেপলার এবং ইতালীয় বিজ্ঞানী গালিলিও গালিলেই।

তবে, পরবর্তীতে উইলিয়াম হার্শেল, ফ্রিডরিখ ভিলহেল্ম বেসেল এবং অন্যান্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে এই মডেলটি ভুল প্রমাণিত হয়। তারা বুঝতে পারেন যে পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহগুলো সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হলেও সূর্য স্থির নয়, এবং এটি মহাবিশ্বের কেন্দ্রেও অবস্থিত নয়। বরং এটি আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রে একটি প্রায় বৃত্তাকার কক্ষপথে আবর্তিত হয়। ১৯২০ সালে, মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডুইন হাবল পর্যবেক্ষণ করেন যে সৌরজগৎ মিল্কিওয়ে নামক গ্যালাক্সির অংশ, যা মহাবিশ্বের অসংখ্য গ্যালাক্সির মধ্যে একটি।

অথচ ১৪০০ বছর আগে, কুরআনে বলা হয়েছে যে চাঁদ এবং সূর্য তাদের নিজ নিজ কক্ষপথে আবর্তিত হচ্ছে।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে –সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে–  এ কথাটি কোরআনে লিখা হয়েছে প্যালিনড্রোম (Palindrome) আকারে! এবং সেটি দুটি আয়াতেই!
প্যালিনড্রোম হচ্ছে এমন শব্দ যার শুরু অথবা শেষ যে দিকে থেকেই পড়া হোক না কেন, শব্দের কোন পরিবর্তন হয় না।
অর্থাৎ শব্দের শুরু এবং শেষ থেকে একই অক্ষরের পুনরাবৃত্তি হয়।
যেমনঃ Mom, Madam ইত্যাদি।
সবাই আপন আপন কক্ষপথে– এই কথাটুকু আরবিতে লিখা হয় كُلٌّ فِي فَلَكٍ
খেয়াল করলে দেখা যাবে كُلٌّ فِي فَلَكٍ বাক্যটি আসলে একটি Palindrome!
“সবাই আপন আপন কক্ষপথে”– এ কথাটুকুকে নিতান্ত কাকতলিয়ভাবে Palindrome আকারে সাজান হয় নি,
বরং বৃত্তাকার কক্ষপথের দিকেই ইংগিত করা হয়েছে বিস্ময়করভাবে!
.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »